খাদ্যান্বেষী ৩
জংলী স্যান্ডউইচ পর্ব: ৫ই জুন, রবিবার, ভারতীয় সময় ২১:২৫, মুম্বই-দোহা উড়ান:
মুম্বই হইতে দোহা যাইতেছি। দোহা যাইবার উড়ানে নৈশাহার কি কি দিবে তাহা লইয়া ভারী কৌতূহল ছিল। বিমান আকাশে উঠিবার খানিকক্ষণের মধ্যে তন্বী বিমানসেবিকাটি সিটের নিকট আসিয়া কোকিল কণ্ঠে শুধাইল “কি খাইবেন ম্যাডাম? আমিষ না নিরামিষ?” বলিলাম আমিষ খাইব। “আমিষের মধ্যে কি খাইবেন ম্যাডাম? চিকেন জংলী স্যান্ডউইচ খাইবেন কি?” শুনিয়া রাগ হইলো। এই স্যান্ডউইচটি ইহার আগে বেঙ্গালুরু-কলিকাতার উড়ানে বার কয়েক খাইয়াছি। ইহাতে জংলীভাব কিছুই নাই, বড় সাদামাটা জিনিস। বলিলাম “আমিষের মধ্যে আর কি কি আছে?” মুক্তোর মত দাঁতে মিষ্ট হাসি ছড়াইয়া সে বলিল “আর কিছু নাই ম্যাডাম, ইহাই আছে শুধু।”
সুন্দর হাস্যরতা মানুষীরা কিছু বলিলে ‘হ্যাঁ’ বলিবে, তাহারা ছড়াইয়া ফেলিলে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখিবে — মানুষের মনস্তত্ত্বে ঈশ্বর ইহা রোপণ করিয়া দিয়াছেন। আমি নিজে মানুষী হইবার কারণে এই ভাব আমার মধ্যে কিছু কম, তবু সুন্দর হাস্যরতা একটি মানুষী আমাকে একটি অতি খাজা মিউচুয়াল ফান্ডে সহজেই ইনভেস্ট করাইয়া ফেলিয়াছিল একদা। আজও আমি নরম করিয়া হাসিলাম। হাসিয়া বলিলাম “তাহা হইলে উহাই দিবেন।” সে খুশি হইয়া কহিল “সাথে পানীয় কি লইবেন ম্যাডাম? চা, কফি, মিক্সড ফ্রুট জুস না আনার জুস?”
আবার আতান্তরে পড়িলাম। বিমানে উঠিবার ঠিক পূর্বেই কফি খাইয়াছি। মধ্যাহ্নে মিক্সড ফ্রুট জুস-ও ঢুকাইয়াছি পাকস্থলীতে। গলার কাছে অম্লভাব টের পাইতেছি। কি করি? যাহা থাকে কপালে, মনে করিয়া বলিলাম “আনার জুস দিবেন।”
ওমা, পাঁচ মিনিট পরে শুনি, আরেক প্যাসেঞ্জার-এর কাছে দাবড়ানি খাইয়া সেই একই মেয়ে বলিতেছে “না না, আছে তো। আরো আছে। বাটারমিল্ক আছে। নন-অ্যালকোহলিক বাডওয়াইসার আছে। কত কি আছে!”
ইহার পর আর কি কহিবার থাকিতে পারে বলুন! কখন থেকে ভাবিতেছিলাম, “আহা এদের বাটারমিল্ক থাকিলে বড় ভালো হইত, উহাই খাইতাম… “। এক্ষণে কি আর অর্ডার বদলানো যাইবে? ধুর ধুর, সবই আমার ললাটের লিখন!
লেখা ও ছবি: নিজস্ব
আগের পর্ব: খাদ্যান্বেষী ২. Food blog by a hungry hippo on an… | by Antara Kundu | Aug, 2022 | Medium