খাদ্যান্বেষী ১
দোসা পর্ব: ৫ই জুন, রবিবার, সময় ১১:০৫, কেম্পেগৌদা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, বেঙ্গালুরু:
যাইতেছি কোথাও একটা। একাই যাইতেছি। গৃহ হইতে যে পলায়ন করিয়াছি তাহা নহে, তবে মনের ভাবখানা কিঞ্চিৎ পলায়নসদৃশ।
এমতাবস্থায় বরাবরই আমি খাইয়া থাকি। খাইতে খাইতে ইহার পর কি খাইব তাহার ছক কষিয়া থাকি। আজি বা তাহার ব্যতিক্রম হইবে কেন?
অতএব ঢুকিয়াছি বেঙ্গালুরু বিমানবন্দরের ‘টিফিন সেন্টার’-এ। এই খাদ্যশালাটি বেশ বড়, ও দক্ষিণ ভারতীয় গৃহসজ্জার শৈলীতে সুসজ্জিত। বিমানবন্দরে সিকিউরিটি চেক ইন হইয়া যাইবার পর, বোর্ডিংপূর্ব সময়ের সুযোগ্য ব্যবহার করিবার উপায় ভাবিতে গিয়া আপনার মন যদি বই, খবরের কাগজ ইত্যাদির দিকে ফিরিয়াও না তাকাইয়া বারংবার “কি খাই, কি খাই” ধ্বনি উঠাইতে থাকে, তবে আপনি এই স্থানে পদার্পণ করিতে পারেন।
যাহা হউক, দোসা… মশালা দোসা… পাকশালা হইতে সদ্যনির্গত ধুম্রমান পেপার মশালা দোসা আমার বড় প্রিয়। চিবাইলে মৃদুমন্দ কুরকুর আওয়াজ তুলিয়া মুখমধ্যে গলিয়া যাইবে এমন দোসা। উজ্জ্বল হরিৎ বর্ণের কদলিপত্রে সযত্নে সজ্জিত দোসা।
আহা, সেই দোসাই খাইতেছি এক্ষণে। আরামে চোখ বুজিয়া আসিতেছে। সঙ্গত করিতেছে সম্বার, নারিকেলের চাটনি, এবং আরো একটি চাটনি। এই শেষটির রন্ধনপ্রণালি সম্পর্কে আমি অবগত নহি, কিন্তু টক-ঝালের মেলবন্ধনটি ভারি ভালো হইয়াছে ইহাতে। জিহ্বায় ‘চকাস’ শব্দ তুলিয়া খাইতে বাধ্য হইতেছি।
খাইতেছি আর ভাবিতেছি, বিমানে কি খাইব? হালকা কিছু খাইব কি? বাদাম খাইব, সল্টেড বাদাম? সাথে কি রহিবে? কফি না জুস? যাহাই খাই, দামটি হালকা হইবে না ইহা সুনিশ্চিত। দেখি, ভাবিয়াচিন্তিয়া চাখিয়া দেখিয়া জানাইব নিশ্চই।
তদবধি, অপেক্ষায় থাকিবেন, এবং ভাল খাইবেন।
লেখা ও ছবি: নিজস্ব